এ মাঠে ২০০ এর বেশি রান তাড়া করে জেতার নজিরই আছে কেবল ২টি।
স্লেজিং সবার জন্য নয়, সব জায়গায় উপযুক্তও নয়। জ্যামাইকা টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে সেটি আরও একবার বুঝল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। স্লেজিং করে বাংলাদেশী ব্যাটারদের হাতে মার খেয়েছে ক্যারিবীয় বোলাররা। ১৮ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা বাংলাদেশ তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে ৫ উইকেটে ১৯৩ রান নিয়ে। এ ইনিংস ব্যাট করতে নেমে টাইগাররা খেলেছে মাত্র ৪১.৪ ওভার। অর্থাৎ অনেকটা ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাটিং করেছেন শাহাদাত হোসেন দিপু ও মেহেদী হাসান মিরাজরা।
এদিন লাঞ্চ বিরতির পর মাত্র ৩ ওভারে খেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলআউট হলে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। এরপর আক্রমণাত্মক বোলিং করতে থাকে ক্যারিবীয়রা। এক পর্যায়ে তারা উইকেটে থাকা দিপু ও সাদমান ইসলামকে স্লেজিং শুরু করে। ক্যারিবীয়দের স্লেজিং চরম পর্যায়ে চলে গেলে এতে হস্তক্ষেপ করতে হয় আম্পায়ারকেও। স্বাগতিক দলের অধিনায়ক ক্রেইগ ব্রাথওয়েটকে কথা বলতে দেখায় আম্পায়ারের সঙ্গে।
তবে মারকুটে ব্যাটিংয়ে এ স্লেজিংয়ের কড়া জবাব দিয়েছে মিরাজ-সাদমানরা। রানিং বিটুইন দ্য উইকেটে সাবলীল খেলা, অহেতুক বল ছেড়ে দেয়ার বদলে প্রতি বল থেকেই রান তোলার প্রবণতা। জ্যামাইকায় বাংলাদেশের কোনো ব্যাটার ফিফটি বা সেঞ্চুরি করেননি সত্য, কিন্তু স্কোরবোর্ড করেছেন সমৃদ্ধ। দিনের খেলা শেষে তাই বাংলাদেশের লিড ২১১ রানের। ক্রিজে আছেন দুই অপরাজিত ব্যাটার জাকের আলী অনিক এবং তাইজুল ইসলাম। ২৯ রানে ক্রিজে অপরাজিত জাকের আলী। ৯ রানে অন্য প্রান্ত আগলে রেখেছেন তাইজুল ইসলাম। ষষ্ঠ উইকেটে দুজনে ৪৭ বলে ২০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে মাঠ ছাড়েন।
দ্বিতীয় ইনিংসে এখন পর্যন্ত ব্যাট করতে নামেননি মুমিনুল হক। অসুস্থ বোধ করায় তাকে ড্রেসিংরুমেই থাকতে হয়েছে। চেহারাই বলে দিচ্ছিল শারীরিকভাবে খুব একটা স্বস্তিতে নেই তিনি। কিন্তু চতুর্থ দিনে প্রয়োজন হলে মাঠে দেখাও যেতে পারে তাকে। বাংলাদেশের লিড আরও বাড়বে সেটা সহজেই বলা চলে।
যদিও লিডের এই সংখ্যাটাই বাংলাদেশকে কিছুটা মানসিকভাবে এগিয়ে রাখছে তৃতীয় দিনের শেষেই। বার্বাডোজের এই স্টেডিয়ামে যে চতুর্থ ইনিংসে ২১২ রানের বেশি লক্ষ্য নিয়ে কেউ কখনো টেস্টই জেতেনি। সর্বোচ্চ ২১২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে জয়ের নজির আছে। ২০০৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এই লক্ষ্য তাড়া করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এ মাঠে ২০০ এর বেশি রান তাড়া করে জেতার নজিরই আছে কেবল ২টি। ২০১২ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০৬ রানের লক্ষ্য পার করেছিল স্বাগতিকরা। এছাড়া ১৫০ এর বেশি রানতাড়া করে জেতার নজির আছে দুইটি। ১৯৮৩ সালে ভারত এবং ২০২১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে।
জ্যামাইকার এ টেস্টেও রান ওঠেনি খুব একটা। বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে করতে পেরেছিল ১৬৪ রান। বিপরীতে ক্যারিবিয়ানরা গুটিয়ে যায় ১৪৬ রানে। বাংলাদেশ লিড পায় ১৮ রানে। সেটাই পরবর্তীতে দ্বিতীয় ইনিংসে ছিল লিড নেয়ার পথে বড় সহায়ক।