কিংস্টন টেস্টে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে তাইজুল ইসলাম মাঠে নেমেছিলেন ম্যাচের তৃতীয় দিনে। সেদিন ২২ বলে ৯ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন বাংলাদেশের এই স্পিনার। সে পর্যন্ত এ বছর টেস্টে তাইজুলের খেলা বলসংখ্যা ছিল ৫১২। বিরাট কোহলিকে টপকে যেতে তাঁকে আরও দুটি ডেলিভারি খেলতে হতো।
গতকাল টেস্টের চতুর্থ দিনে তাইজুল শুধু দুটি বলই খেলেননি, সব মিলিয়ে খেললেন আরও ২৮টি ডেলিভারি। ৫০ বলে ১৪ রানে আউট হয়ে ফেরেন। অর্থাৎ এই বছর টেস্টে তাইজুল খেললেন মোট ৫৪০ ডেলিভারি। বাংলাদেশ এ বছর আর টেস্ট খেলবে না। তাই এ বছর তাইজুলের আর টেস্টে ব্যাটিংয়ে নামার সম্ভাবনা নেই। এবার আসল কথায় আসা যাক। চলতি বছর এখন পর্যন্ত টেস্টে বল খেলার তালিকায় আইসিসি টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে সাবেক শীর্ষ ব্যাটস্যমান কোহলিকেও টপকে গেছেন তাইজুল!
কোহলি এ বছর এখন পর্যন্ত ৭ টেস্টে ১৪ ইনিংসে ৫১৩ বল খেলেছেন। কিংস্টনে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামার আগে এ বছর টেস্টে ৪৯০ বল খেলেছিলেন তাইজুল। দ্বিতীয় ইনিংসে ৫০ বল খেলায় শুধু কোহলি নয়, এইডেন মার্করাম, মারনাস লাবুশেন, ক্যামেরন গ্রিন, বেন ফোকসের মতো স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের বল খেলার হিসাবে টপকে গেছেন তাইজুল। তবে বাংলাদেশের এই স্পিনারকে টপকে যাওয়ার সুযোগ আছে কোহলির সামনে। অস্ট্রেলিয়া সফরে বোর্ডার–গাভাস্কার সিরিজে ভারত এ বছর আরও তিনটি টেস্ট খেলবে। স্বাভাবিকভাবেই কোহলির তাইজুলকে টপকে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
কোহলির মতো তাইজুলও এ বছর ৭ টেস্টে ১৪ ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেছেন। বল খেলেছেন মোট ৫৪০টি। তবে ভারতীয় কিংবদন্তি যেহেতু স্বীকৃত ব্যাটসম্যান তাই রানের হিসাবে অবশ্যই তাইজুলের চেয়ে এগিয়ে। ১৪ ইনিংসে ২৯.৫৮ গড়ে এ বছর এখন পর্যন্ত ৩৫৫ রান করেছেন কোহলি। তাইজুল ১৪ ইনিংসে ১৪.৭৮ গড়ে ২০৭ রান করেছেন। রানের পার্থক্য ১৪৮ হলেও কোহলির ব্যাটিং গড়ে তাকিয়ে বলা যায়, বছরটা ভালো যাচ্ছে না কোহলির। নইলে হয়তো বল খেলার এই তুলনাই উঠত না।
বিরাট কোহলিএএফপি
তাইজুলের পেছনে আছেন আইসিসির ব্যাটসম্যানদের র্যাঙ্কিংয়ে সাবেক শীর্ষস্থানীয় আরও একজন—স্টিভেন স্মিথ। ৬ টেস্টে ১২ ইনিংসে এ পর্যন্ত ৪৭১ বল খেলেছেন অস্ট্রেলিয়ান তারকা। ব্যাটিং গড় ২৫.৫৫, রান করেছেন ২৩০। কোহলির মতো স্মিথও এ বছর টেস্টে বল খেলার হিসাবে তাইজুলকে টপকে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। কারণটা আগেই বলা হয়েছে। পাঁচ টেস্টের সিরিজে ভারত–অস্ট্রেলিয়া আরও তিনটি টেস্ট খেলবে এ বছর। পার্থে প্রথম টেস্টে ২৯৫ রানে জিতেছে ভারত। সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টেস্টটি শুরু হবে ৩ জানুয়ারি থেকে।
টেস্ট বছরের এ সময় পর্যন্ত ১৪ ব্যাটসম্যান অন্তত এক হাজার বল খেলেছেন। এই তালিকায় বাংলাদেশের শুধু একজন ব্যাটসম্যান আছেন। তিনি আসলে অলরাউন্ডার—মেহেদী হাসান মিরাজ। ১০ ম্যাচে ১৮ ইনিংসে ১১১৩ বল খেলেছেন। ৩৮.৩৭ গড়ে রান করেছেন ৬১৪।
এ বছর বল খেলায় শীর্ষ তিন ব্যাটসম্যান যথাক্রমে জো রুট, যশস্বী জয়সোয়াল ও কেইন উইলিয়ামসন। ইংল্যান্ড তারকা রুট ১৫ ম্যাচে ২৭ ইনিংসে ২২১২ বল খেলে ৫৬.৭০ গড়ে ১৩৬১ রান করেছেন। ভারতের তরুণ ওপেনার জয়সোয়াল ১২ ম্যাচে ২৩ ইনিংসে ১৭৬৫ বল খেলে দ্বিতীয়। ৫৮.১৮ গড়ে ১২৮০ রান করেছেন জয়সোয়াল। উইলিয়ামসন মাত্র ৭ টেস্টে ১৪ ইনিংস ব্যাট করেই উঠে এসেছেন তিনে। ৫৯.৩৮ গড়ে ৭৭২ রান করার পথে ১৪৯৮ বল খেলেছেন কিউই তারকা।
মেহেদী হাসান মিরাজপ্রথম আলো
বাংলাদেশের হয়ে এ বছর টেস্টে সর্বোচ্চ বল খেলায় মিরাজের পরেই রয়েছেন মুমিনুল হক। ১০ ম্যাচে ১৯ ইনিংসে ৯৫৬ বল খেলেছেন মুমিনুল। ৩১.১১ গড়ে করেছেন ৫২৯ রান। ৭ টেস্টে ১৪ ইনিংসে ৭৩৩ বল খেলে তৃতীয় সাদমান ইসলাম। ২৮ গড়ে ৩৬৪ রান করেছেন এই বাঁহাতি ওপেনার। ৯ টেস্টে ১৬ ইনিংসে ৬৭৭ বল খেলে চারে লিটন দাস। ২৪.৬২ গড়ে ৩৯৪ রান করেছেন লিটন। ৮ টেস্টে ১৫ ইনিংসে ৫৯০ বল খেলে পাঁচে জাতীয় দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন। চোটের কারণে বাইরে থাকা নাজমুল ২১.১৩ গড়ে করেছেন ৩১৭ রান।