জামদানি নকশার সামান্য একটু ছোঁয়া বদলে দিতে পারে বসার ঘরের পুরো আবহ। কাঠ কিংবা বোর্ডের আসবাবের একটা অংশে থাকতে পারে জামদানি মোটিফ। ওই অংশে আলাদা কোনো রং করে নকশাটা যে ফুটিয়ে তুলতে হবে, তা–ও কিন্তু না। একই রঙের মধ্যে কেবল অনন্য নকশার ধাঁচেই ফুটে উঠবে আলাদা একটা বৈশিষ্ট্য।
চাইলে আসবাবের নানা অনুষঙ্গেও ব্যবহার করা যেতে পারে জামদানির নকশা। লিভিং রুমের অন্দরসজ্জায় জামদানি মোটিফের ব্যবহার প্রসঙ্গে বলছিলেন আরএমএ আর্কিটেক্টসের প্রধান স্থপতি রাফিয়া মারিয়াম আহমেদ।
জামদানি নকশার সামান্য একটু ছোঁয়ায় বদলে যাবে পুরো ঘরের আবহ।
আসবাবের গড়নেই জামদানি মোটিফ
আসবাবের একটা অংশে খাঁজকাটা নকশায় দারুণভাবে ফুটে উঠতে পারে জামদানি মোটিফ। আবার ফ্রেমের মতো করে বসিয়েও নেওয়া যায় জামদানি নকশা। আসবারের পুরোটা জামদানি নকশা করলে তা খুব একটা দৃষ্টিনন্দন না-ও হতে পারে। বরং সাদামাটা গড়নের আসবাবের একটি ছোট অংশে জামদানি মোটিফ ব্যবহার করলে তা দেখায় চমৎকার।
কাঠের সোফার ক্ষেত্রে কেবল হাতলেই থাকতে পারে হালকা ধরনের জামদানি নকশা। কাঠ আর বেতের মিশেলে সোফার হাতল গড়লেও এ ধরনের মোটিফ ব্যবহারের সুযোগ থাকে। বসার ঘরে চেয়ার রাখা হলে সেটিরও যেকোনো একটি অংশে এমন মোটিফ থাকতে পারে।
সেটি হতে পারে চেয়ারের একটি প্রান্তের ছোট অংশ। আবার ধরা যাক, বসার ঘরে এমনভাবে দুই–একটি চেয়ার রাখতে হচ্ছে, যাতে চেয়ারের পেছন দিকটাও দেখা যায়। এমন হলে কিন্তু চেয়ারের পেছন দিকের যেকোনো একটি ছোট অংশে জামদানি মোটিফের নকশা করিয়ে নিতে পারেন। শেলফের মতো আসবাবে হাতল থাকলে সেখানটায় ফুটিয়ে তুলতে পারেন এই দেশজ ঐতিহ্য; কিংবা টেবিলের কোনো একটা অংশে। ধরুন, পারিবারিক বসার জায়গায় একটা বাক্সজাতীয় জিনিস রয়েছে। সেটির একপাশেও করিয়ে নিতে পারেন খানিকটা জামদানি কারুকাজ।
আসবাবের একটি ছোট অংশে জামদানি মোটিফ ব্যবহার করলে তা চমৎকার দেখাবে।
আসবাবের অনুষঙ্গে
আসবাবের গড়নে জামদানি মোটিফ না থাকলেও যে ভিন্নতা আনা যাবে না, তেমনটা কিন্তু নয়। আসবাবপত্র সহজে বদলে ফেলা সম্ভব না হলেও এগুলোর কিছু অনুষঙ্গ বদলে ঘরের রূপবদল করা যেতে পারে আয়াসেই। এসব অনুষঙ্গেও আপনি ব্যবহার করতে পারেন জামদানি মোটিফ।
এই যেমন কুশন কভারের একপাশে জামদানির পাড় বসানো যেতে পারে। চাপা সাদা, ধূসর, বিস্কুট বা অন্যান্য হালকা রঙের সোফায় রাখা কুশন কভারে লাল বা নীলের মতো উজ্জ্বল জামদানি পাড়ের একটু ছোঁয়া থাকলে দারুণ দেখাবে। টেবিল রানারেও থাকতে পারে জামদানি মোটিফ।
আরও যা
জামদানি মোটিফের অন্দরসজ্জাসামগ্রীও কাজে লাগাতে পারেন। বসার ঘরের মেঝেতে বা টেবিলে ল্যাম্পশেড রাখেন অনেকে। এই ল্যাম্পশেডটিতেও থাকতে পারে জামদানি নকশা। কিংবা জামদানি মোটিফ ব্যবহার করতে পারেন ঘরের পর্দার একটা অংশে। অন্দরের যেকোনো অনুষঙ্গের এমন একটি অংশে জামদানি মোটিফ ব্যবহার করুন, যেন তা আলাদাভাবে চোখে পড়ে; পুরোটা এই মোটিফ ব্যবহার না করাই ভালো।